বৈশাখের গরমে স্বস্তি আনতে স্বাস্থ্যকর সাত তরল

বৈশাখ মানেই অনেক গরম। এ সময় নিজেকে আর্দ্র রাখতে হবে।  তাই স্বাস্থ্যকর তরল পানীয় পান করা প্রয়োজন। তবে এসব তরল ঘরে তৈরি করে খাওয়াই ভালো। বাইরের অস্বাস্থ্যকর তরল খেয়ে টাইফয়েড, জন্ডিসের মতো রোগ হতে পারে।

আজ জানাব বৈশাখের গরমে কিছু স্বাস্থ্যকর তরলের কথা।   

১. বাঙ্গি  জুস

এটি অনেক শীতল একটি পানীয়।  যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য খুবই ভালো। দ্রুত হজম হওয়া ছাড়াও এই তরল সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এ ছাড়া এই জুসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-এ।  এটি চোখের জন্য উপকারী। 

২. তরমুজে জুস

তরমুজের জুস খুব স্বাদের। তবে জুস করার সময় বিচি ফেলে জুস করলে ভালো। এই জুসও ব্লাডপ্রেশার কমাতে, ত্নক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে বেশি খেলে পেট গরম হতে পারে বা গ্যাস হতে পারে। তাই চিনি ছাড়া ১৫০ থেকে ২০০ মিলিলিটার জুস দিনে একবার খাওয়া যেতে পারে।

৩. বেলের জুস

পেটের জন্য খুব উপকারী একটি জুস। বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে, তাদের জন্য খুবই উপকারী।  বেলের জুস চিনি ছাড়া খেলে ভালো। বেলের জুসে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে। এটি রক্তের ইলেকট্রলাইটসের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৪. লেবুর জুস

এই তরলটি বানানো খুব সহজ হলেও এর গুণ কিন্তু অনেক। লেবু, সামান্য লবণ আর একটু মধু বা তালমিশ্রি দিয়ে বানিয়ে ফেলুন সহজ এই তরল।  লেবুপানি আপনাকে রাখবে সতেজ আর আর্দ্র। লেবুপানির ক্যালরি নির্ভর করবে আপনি তাতে মিষ্টি কী এবং কতটুকু মেশাবেন তার ওপর। লেবু-মধু পানি ওজন কমাতেও উপকারী।  বৈশাখে ঘোরাঘুরি করার সময় সঙ্গে রাখতে পারেন এই তরল।

৫. টক দইয়ের লাচ্ছি

টক দই, সামান্য বিট লবণ, লেবুপাতা বা পুদিনা আর বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি  করা লাচ্ছি শরীরের জন্য খুব উপকারী।  এটি এমন তরল, যা থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়। হজমে খুব সহায়ক।  বৈশাখে অনেক ভারী খাবার খেয়ে নিলে তার সঙ্গে কোল্ড ড্রিংক না পান করে এই তরল পান করলে তা হজমে সাহায্য করবে।

৬. কাঁচা আমের জুস

বৈশাখের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তরল। এটি শরীরের নানা উপকারে আসে। এটি সূর্যরশ্মির কারণে ত্বকের পুড়ে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এটি হিট স্ট্রোক হওয়া প্রতিরোধে উপকারী। রক্তের ইলেকট্রলাইটসের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৭. ডাবের পানি 

এই প্রাকৃতিক তরল অনেক স্বাস্থ্যকর। পানিশূন্যতা প্রতিরোধে এর জুরি নেই। অনেক পটাসিয়াম থাকে বলে এই তরল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও পেশির সুস্থতায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।

সুতরাং, এই বৈশাখে ঘরে তৈরি নানা তরল আপনাকে রাখবে সুস্থ।  তবে পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ তরল হলো বিশুদ্ধ পানি। তাই যেকোনো তরলের পাশাপাশি গ্রহণ করুন পর্যাপ্ত পানি। এটি আপনাকে নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে। 

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও টিপস পেতে ভিসিট করুন অন্যান্য ব্লগগুলো।

দুধ চা নাকি রঙ চা-কোনটি বেশি উপকারি?

জার্মানির বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ১৬ জন মহিলার উপর একটি গবেষনা করেন ।তাদের প্রত্যেককে একবার করে রঙ চা, দুধ চা এবং শুধু গরম পানি পান করতে দেয়া হয় এবং প্রতিবার-ই আল্ট্রাসাউন্ড পদ্ধতিতে তাদের রক্তনালীর প্রসারন মাপা হয়।এতে দেখা যায় যে, রঙ চা রক্তনালীর প্রসারন ঘটায় যা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রনের জন্য অত্যন্ত জরুরী। চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাটেচিন এর জন্য দায়ী। দুধের মধ্যে থাকা ক্যাসেইন নামক একটি পদার্থ চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাটেচিন কে বাধাগ্রস্থ করে ফেলে। ফলে চায়ে দুধ মেশালে চায়ের রক্তনালী প্রসারনের ক্ষমতা একবারেই চলে যায়।

অন্য একটি গবেষনায়  ইউ এস কৃষি অনুষদের গবেষকেরা ইঁদুরের কোষ এর উপর পরীক্ষা করে দেখেন যে, চায়ের প্রভাবে কোষ গুলো থেকে সাধারণের তুলনায় ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন নির্গত হয়, যা ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রনে অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু চায়ে দুধ মেশালে এই ইনসুলিন নির্গমনের হার কমতে থাকে। যদি ৫০ গ্রাম দুধ মেশানো হয়ে, তাহলে ইনসুলিন এর নির্গমন শতকরা ৯০% কমে যায়।

রঙ চা উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রনে অত্যন্ত কার্যকরী কিন্তু দুধ চা নয়।চা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও দেহের জীবকোষের ক্ষয় রোধ করে। কিন্তু চায়ে দুধ মেশালে এর কিছু গুন কমে যেতে পারে। কয়েক বছর আগে এক গবেষনায় দেখা গেছে চায়ের মধ্যে ট্যানিন্ নামের একটি উপাদান খাদ্যনালির ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। চুলায় চা পাতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্বাল দিলে চায়ের ট্যানিন বেশি বের হয়। সাধারণ চায়ের দোকানে চা পাতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্বাল দেয়ার ফলে ট্যানিন্ বেশি বের হয়,এরকম চায়ের ক্ষেত্রে কিছু দুধ দরকার।এই দুধ চায়ের ট্যানিন্ কে আঁকড়ে ধরে এবং তাকে শরীরে মিশতে দেয় না। এ জন্য বেশি জ্বালের চায়ের ক্ষেত্রে দুধ মেশালে উপকার পাওয়া যেতে পারে। আর সাম্প্রতিক গবেষণার ফল অনুযায়ী, হালকা জ্বালের রং চা-ই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও তথ্য পেতে এই ব্লগটি ভিসিট করুন।