স্বাস্থ্য সেবা কার্ডের ঘোষণা দিল মেডিএইডার

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উৎসাহ প্রদান এবং নিজস্ব সেবার আপডেট সম্পর্কে জানাতে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যসেবা কার্ড উদ্বোধন করেছে মেডিকেল ট্যুরিজমভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেডিএইডার। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসিস অডিটোরিয়ামে এই  স্বাস্থ্যসেবা কার্ড উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, হেলথ কার্ডের (স্বাস্থ্যসেবা কার্ড) মাধ্যমে যে কেউ ভারত, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, জার্মানি এবং তুরস্কের ১১ হাজার ২৫০টি হাসপাতালের সঠিক চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন। দেশের বাইরে চিকিৎসা সেবায় ভিসা প্রসেস থেকে শুরু করে যাতায়াত, আবাসন, চিকিৎসা এবং ওষুধ সবকিছুতেই মেডিএইডার টিম সহযোগিতা প্রদান করবে। বাংলাদেশে মেডিএইডার এবং ভারতের ভিবি হেলথের উদ্যোগ কিউরমার্টের সঙ্গে যৌথভাবে এই সেবা প্রদান করা হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পানীয় পান করার ওপর একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, “যাদের বিদেশে পরিচিত চিকিৎসক নেই, তাদের মেডিএইড চিকিৎসক বন্ধু হয়ে সঠিক চিকিৎসা সেবা পেতে সাহায্য করবে।”

হেল্‌থ সেমিনার এবং কার্ড উদ্বোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই ব্লগটি দেখুন।

মেডিএইডার চেয়ারম্যান শায়ের হাসান বলেন, “বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে সমস্যা সমাধানে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের দরকার। মেডিএইডার রোগীদের দেশে এবং বিদেশে সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ করে যাবে।” Source: Prothom Alo

সন্তান প্রসবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় সিজারে

বাংলাদেশের পরিবারগুলো সন্তান প্রসব সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যয়ের মধ্যে সিজারে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে থাকে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণার তথ্যমতে, স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার সুযোগ থাকা জায়গায় সন্তান সিজারের মাধ্যমে প্রসব হলে প্রতিটি জন্মে গড়ে ২১ হাজার ১২১ টাকা (২৫০ ডলার) ব্যয় হয়। অপরদিকে স্বাভাবিকভাবে জন্ম হলে মাত্র পাঁচ হাজার ৬৯ টাকা (৬০ ডলার) ব্যয় হয়।

চলতি বছরে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হলো- ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা: সবার জন্য সর্বত্র’। এতে আর্থিক কষ্ট ছাড়াই গুণগত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়, স্বাস্থখাতে ব্যয়ের ফলে প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের দিকে চলে যাচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির গবেষণায়ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বৃদ্ধির চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে সিজারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে প্রায় ৩১ শতাংশ প্রসব হচ্ছে সিজারের মাধ্যমে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, সিজারের হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হলে তা ঠিক আছে বলে ধরে নেওয়া হলেও বাংলাদেশে তা অনেক বেশি। আইসিডিডিআরবি এর আগে তাদের গবেষণায় সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে জাতীয় তদারকির আহ্বান জানিয়েছিল।

আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ও দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব হেলথ প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে প্রকাশিত গবেষণাটির মূল লেখক ডা. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে বিত্তবানরা সন্তান জন্মের সময় প্রতি প্রসবে প্রায় ২৮০ মার্কিন ডলার ব্যয় করেন।

তবে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারগুলোও সিজারের ক্ষেত্রে অন্তত ২০০ মার্কিন ডলার ব্যয় করেন, যোগ করেন আব্দুর রাজ্জাক।

সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যয় বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারগুলোর এ ব্যয় বাংলাদেশের জন্য খুবই ভয়ানক একটি ব্যাপার। কারণ যেখানে সর্বস্তরের জনসাধারণকেই এখনো স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনা যায়নি।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ (বিডিএইচএস) তথ্যনুসারে, চার হাজার ৫০০টি সন্তান প্রসবের তথ্য বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে ডা. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, আমরা আরো লক্ষ করেছি, যেসব নারীদের বয়স ৩৫ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে তারা বেশি ব্যয় করছেন এবং আশ্চর্যজনক বিষয় হলো যারা সন্তান জন্মের আগে থেকেই স্বাস্থ্যসেবা নিয়মিত নিয়েছেন এমনকি অনেক উচ্চ শিক্ষিত নারীরাও সিজারে বেশি ব্যয় করেছেন। শহরাঞ্চলে এ চিত্রটি সবচেয়ে বেশি।

গবেষক বলেন, সন্তান প্রসবের এ অতিরিক্ত ব্যয়ের বেশিরভাগই আসে পারিবারিক উৎস (আয় ও সঞ্চয়) থেকে। এতে করে ওই পরিবারের জীবনযাত্রা ও দৈনন্দিন গৃহস্থালিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। Source: ICDDRB

আরও স্বাস্থ্য টিপস পেতে অন্যান্য ব্লগগুলো দেখুন।