প্রাচীন যুগ চীনারা থেকেই বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে মাশরুম গ্রহণ করে আসছে। ভিটামিন, এন্টি-অক্সিডেন্ট ও নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাদ্য উপাদান অনেক আগে থেকে ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখেও তারা সেবন করে আসছে। ১৯৬৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৭টি ক্যান্সার গবেষণা নিরীক্ষা করেন পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। সাড়ে ১৯ হাজার ক্যানসার রোগীকেও তারা বিশ্লেষণ করেছেন।
প্রতিদিন ১৮ গ্রামের মতো মাশরুম খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কাটানো যায় বলে নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। গবেষণাটি করেছে পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি। এটি এডভান্সেস ইন নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিদিন মাঝারি আকারের দুটি মাশরুম খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
শিতাকে, অয়েস্টার, মাইতাকে ও কিং অয়েস্টারের মতো মাশরুমের প্রকরণগুলোতে হোয়াইট বাটন, ক্রিমিণী ও পোর্টোবেলো মাশরুমের চাইতে অধিক মাত্রায় এমাইনো এসিড থাকে। তবু গবেষণা বলছে, যারা খাবারে বিভিন্ন ধরনের মাশরুম অন্তর্ভুক্ত করে থাকেন, তাদের ঠিকই ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
পেন স্টেট কলেজ অব মেডিসিনের রোগতত্ত্ব বিভাগের স্নাতক শিক্ষার্থী জিবরিল বা বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণে এরগোথিওনিনের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে মাশরুমে। শরীরে এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।’
মাশরুমের সঙ্গে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর তীব্র যোগসূত্র পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি।
পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান এবং ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ও গবেষণাটির সহ-লেখক জন রিচি বলেন, ‘মোটের ওপর এই গবেষণাগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মাশরুম সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে।’
তবে শুধু মাশরুমই নয়, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল অন্তর্ভুক্তের কথা বলেছেন বিশ্ব ক্যানসার গবেষণা তহবিলের হেড অব রিসার্চ ইন্টারপ্রিটেশন হেলেন ক্রোকার।
তিনি বলেন, ‘গবেষণাগুলোর আলোকে বলা যায়, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে জীবনযাত্রা গভীর ভূমিকা রাখে। শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে শরীরচর্চার অভ্যাস। অতিরিক্ত ওজন ক্যানসারের আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।’
কিভাবে ক্যান্সার থেকে বাচবেন ?