গরুর মাংস কাদের জন্য স্বাস্থ্যকর ?

রেডমিট বা লাল মাংসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শুনতে শুনতে অনেকেরই মনে হতে পারে লাল মাংস তথা গরু-খাসির মাংসের বুঝি কোনো ভালো গুণই নেই। আসলে রেডমিট সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়স্কদের জন্য। যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই, ওজনও স্বাভাবিক তাদের জন্য লাল মাংসের এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ঠিক হবে না।

রেডমিট বা লাল মাংস অনেকেই পছন্দ করেন, কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে কেউ কেউ গরুর মাংসকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে ভাবতে শুরু করেছেন। এর কারণ হল রেডমিটের পক্ষ এবং বিপক্ষ-দুই দলই চরম পক্ষপাতিত্বের বিবেচনায় রেডমিটকে বিচার করছেন। আসলে কৃশকায় গরুর মাংসকে স্বাস্থ্যকরই বলা চলে। কারণ তাতে কোলেস্টেরল থাকে কম। এ ধরনের গরুর সাধারণ মাংস দৈনিক ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম গ্রহণে খুব একটা অসুবিধা নেই।

তবে রেডমিটের এসব ঝুঁকির পেছনে মূলত দায়ী মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ। রেডমিট এককভাবে দায়ী নয়। দেখা গেছে দৈনিক ৫০ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে ৪২ শতাংশ আর ১৯ শতাংশ বাড়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি। তবে গরুর মাংসের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি কিছুটা কম। রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি শূকরের মাংসে। প্রক্রিয়াজাত বা প্রসেসড মিটের মধ্যে সসেজ, সালামি, বেকন এবং লাঞ্চন মিটস অনেকেরই পছন্দের খাবার। অবাক বিষয় হচ্ছে, প্রক্রিয়াজাত এবং সাধারণ গরুর মাংসে সম্পৃক্ত চর্বির পরিমাণ প্রায় একই। প্রক্রিয়াজাত গরুর মাংসে কোলেস্টেরল এবং আয়রন কম। তবে প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে ব্যবহৃত লবণের কারণে সোডিয়াম এবং সংরক্ষণে ব্যবহৃত উপাদানের কারণে নাইট্রেট বেশি থাকে।

এই লবণের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয় এবং নাইট্রেটের জন্য রক্তনালির দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ইনসুলিন নিঃসরণ কমে গিয়ে ডায়াবেটিস প্রবণতা বাড়ায়। যার ফলাফল হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি।

বেশি বেশি কোনো কিছুই ভালো নয়, তেমনি গরুর মাংসও বেশি খাওয়া ভালো নয়। তবে ঢালাওভাবে সবাই গরুর মাংস এড়িয়ে চলবেন এটা ঠিক নয়। আবারও বলছি, সাধারণ কম চর্বিযুক্ত গরুর মাংস শিশু-কিশোর, তরুণ-যুবার জন্য পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচিত। তবে আগেই বলেছি, বয়স ৩০-এর ওপরে, রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, মেদাধিক্য ও বাড়তি ওজনদার মানুষ, ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন কিংবা আক্রান্ত হয়েছেন হৃদরোগে তাদের জন্য গরুর মাংস তথা রেডমিট এড়িয়ে চলাই মঙ্গলজনক।

কিভাবে ক্যান্সার থেকে বাচবেন ?

প্রাচীন যুগ চীনারা থেকেই বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে মাশরুম গ্রহণ করে আসছে। ভিটামিন, এন্টি-অক্সিডেন্ট ও নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাদ্য উপাদান অনেক আগে থেকে ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখেও তারা সেবন করে আসছে। ১৯৬৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৭টি ক্যান্সার গবেষণা নিরীক্ষা করেন পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। সাড়ে ১৯ হাজার ক্যানসার রোগীকেও তারা বিশ্লেষণ করেছেন।

প্রতিদিন ১৮ গ্রামের মতো মাশরুম খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কাটানো যায় বলে নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। গবেষণাটি করেছে পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি। এটি এডভান্সেস ইন নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিদিন মাঝারি আকারের দুটি মাশরুম খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

শিতাকে, অয়েস্টার, মাইতাকে ও কিং অয়েস্টারের মতো মাশরুমের প্রকরণগুলোতে হোয়াইট বাটন, ক্রিমিণী ও পোর্টোবেলো মাশরুমের চাইতে অধিক মাত্রায় এমাইনো এসিড থাকে। তবু গবেষণা বলছে, যারা খাবারে বিভিন্ন ধরনের মাশরুম অন্তর্ভুক্ত করে থাকেন, তাদের ঠিকই ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

পেন স্টেট কলেজ অব মেডিসিনের রোগতত্ত্ব বিভাগের স্নাতক শিক্ষার্থী জিবরিল বা বলেন, ‌‘প্রচুর পরিমাণে এরগোথিওনিনের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে মাশরুমে। শরীরে এই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।’

মাশরুমের সঙ্গে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর তীব্র যোগসূত্র পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি।

পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান এবং ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ও গবেষণাটির সহ-লেখক জন রিচি বলেন, ‘মোটের ওপর এই গবেষণাগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মাশরুম সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলে।’

তবে শুধু মাশরুমই নয়, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল অন্তর্ভুক্তের কথা বলেছেন বিশ্ব ক্যানসার গবেষণা তহবিলের হেড অব রিসার্চ ইন্টারপ্রিটেশন হেলেন ক্রোকার। 

তিনি বলেন, ‘গবেষণাগুলোর আলোকে বলা যায়, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে জীবনযাত্রা গভীর ভূমিকা রাখে। শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে শরীরচর্চার অভ্যাস। অতিরিক্ত ওজন ক্যানসারের আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।’

কিভাবে ক্যান্সার থেকে বাচবেন ?

হজম শক্তি বাড়াবে যে চা !

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে শরীরের প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো। সেক্ষেত্রে ভেষজ উপাদানগুলো অধিক কার্যকরী। এই পানীয় নিয়মিত পান করলে শরীরের পরিবর্তন নিজেই লক্ষ্য করবেন।দারুচিনি চামেটাবলিজম বাড়াতে দারুণ কার্যকরি এই মসলা। এতে একইসঙ্গে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক গুণাবলী রয়েছে। দারুচিনি চা দারুণ ডিটক্স হিসেবেও কাজ করে। এ কাপ গরম পানিতে ১ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন। ঘুমানোর অন্তত আধাঘণ্টা আগে পান করুন এই চা।মেথি চামেথি পাতায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পাওয়া যায়। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ ও হাড়কে শক্তিশালী করার জন্য এ চা বেশ উপকারী। নিয়মিত মেথি চা পান করলে কিডনিতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহে সহায়তা করে। যা কিডনির পাথরের মতো সমস্যা দূর করতে কার্যকর।অ্যাসিডিটি বা হজমের যাবতীয় সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে মেথি চা। এছাড়াও মেথিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পেট পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূরে রাখতে সাহায্য করে।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চা খেতে পারলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সেই সঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে।মেথি চা তৈরী করতে প্রথমে ১ চামচ মেথি গুঁড়ো নিন। দেড় কাপ ফুটন্ত গরম পানিতে ওই গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। এর সঙ্গে ১ চামচ মধু মেশাতে পারেন। চাইলে এর সঙ্গে চা পাতা বা তুলসি পাতাও মেশাতে পারেন। সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার ছেঁকে নিয়ে সামান্য ঠান্ডা করে পান করুন।

করোনার টিকার জন্য কিভাবে নিবন্ধন করবেন?

দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে সবার আগে টিকা দেওয়া হবে। পরদিন ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেয়া হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদেশে করোনার গণ টিকাদান শুরুর পরিকল্পনা সরকারের। 

তবে তার আগে টিকা পেতে সবাইকে সবাইকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য ‘সুরক্ষা অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

 যেভাবে করতে হবে অনলাইনে নিবন্ধন:
টিকা পেতে আগ্রহীরা সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে (www.surokkha.gov.bd) গিয়ে অথবা মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করে নিবন্ধন করতে পারবেন। অ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। নিবন্ধনের পর সেখান থেকেই জানা যাবে, কবে কখন টিকা নিতে হবে।

১৮ বছরের কম বয়সীরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন না। কারণ, অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি।

এই অ্যাপ্লিকেশনে পরিচয় যাচাইয়ে ১৮টি শ্রেণি করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি শ্রেণি সিলেক্ট করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নিবন্ধন শুরু করতে হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই হবে। সব ঠিক থাকলে স্ক্রিনে নিবন্ধনকারীর নাম দেখানো হবে বাংলা ও ইংরেজিতে। সেখানে একটি ঘরে মোবাইল ফোন নম্বর চাওয়া হবে। পরবর্তীতে ওই নম্বরেই নিবন্ধনকারীকে টিকাদান সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস করা হবে।

মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ঘর পূরণ করতে হবে, যেখানে জানাতে হবে নিবন্ধনকারীর দীর্ঘমেয়াদী রোগ বা কো মরবিডিটি আছে কি না, থাকলে কোন কোন রোগ আছে।

আরেকটি ঘরে নিবন্ধনকারীর পেশা জানাতে হবে এবং তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে সরাসরি জড়িত কি না তাও জানাতে হবে।

এরপর বর্তমান ঠিকানা ও কোন কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ইচ্ছুক তা সিলেক্ট করতে হবে। সব শেষে ফরম সেইভ করলে নিবন্ধনকারীর দেওয়া মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে ওটিপি। সেই ওটিপি কোড দিয়ে ‘স্ট্যাটাস যাচাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে।  

নিবন্ধন সম্পন্ন হলে টিকার প্রথম ডোজের তারিখ ও কেন্দ্রের নাম এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করে এসএমএস এর মাধ্যমে পাওয়া ওটিপি কোড দিয়ে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে।

এসএমএসে জানিয়ে দেয়া তারিখে টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে হবে। এভাবে দুটি ডোজ নিতে হবে। তারপর সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সনদ সংগ্রহ করা যাবে।

জরায়ু ক্যান্সার কি এবং এর লক্ষন?

জরায়ুতে কোন কোষের অস্বাভাবিক বাড়ার কারণে জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে। কোষের অস্বাভাবিক বাড়ার কারণে টিউমার হয় যা পরে ক্যান্সারে রূপ নেয়। জরায়ু ক্যান্সারের সঠিক কারন এখনও জানা যায়নি, তবে অনেকে স্থুলতা, হাইপারপ্লাশিয়া, বাচ্চা না হওয়া, ৫৫ বছরের পর মেনোপোজ হওয়া ও পারিবারিক ক্যান্সার হওয়ার ইতিহাসকে এই ক্যান্সারের কারন হিসাবে ধরে থাকেন।

জরায়ু ক্যান্সারের কিছু সাধারণ লক্ষনঃ

– জরায়ুপথে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া

– প্রস্রাবে জালাপোড়া ভাব

– পেলভিক পেইন

জরায়ু ক্যান্সার কিভাবে ধরা পরে?

জরায়ু ক্যান্সার পেপ টেস্ট, আলট্রাসাউন্ড, বায়পসি, পেলভিক পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান ও এম আর আইয়ের মাধ্যমে ধরা পরে।

জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা

-সার্জারি

-কেমোথেরাপি

-রেডিয়েশন

-হরমোন থেরাপি

জরায়ু ক্যান্সারের স্টেজ, রোগীর বয়স ও স্বাস্থ্য অনুযায়ী এর চিকিৎসা নির্ভর করে।

বিশ্বের ৫০ টি ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার জন্য কল করুন ০১৭ ৫৫৬৯ ০০০৭

ডাক্তার বলেছিল আমার বাঁচার সম্ভবনা মাত্র ৩০ ভাগ- সোনালি বেন্দ্রে

আমার যখন স্তন ক্যান্সার ধরা পরার পর আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। আমি আর আমার স্বামী ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার সব টেষ্ট চেক করে বললো আমার স্তন ক্যান্সার চতুর্থ স্টেজে আছে আর আমার বাঁচার সম্ভবনা ৩০ ভাগ মাত্র, যেটা শুনে আমি মনে খুব আঘাত পাই। সবাই বলাবলি করছিল যে আমার জীবনযাত্রা এমন নয় যে আমার ক্যান্সার হবে। আমি তখন একজন মনরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাই আর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আমাকে বলে ক্যান্সার সাধারণত জেনেটিক্যালি হয়ে থাকে আর ক্যান্সার মানেই মরণ নয়, তুমি তোমার মনকে শক্ত কর। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের এই কথার পর আমি সাহস ফিরে পাই, আর নিজেকে দায়ী করা বন্ধ করি। আমি ভাবি আমি এমন কোন খারাপ কাজ করিনি যে সেজন্য আমার ক্যান্সার হয়েছে।

পুরো সময় আমি আমার পরিবারকে পাশে পেয়েছি। আমার স্বামী, বোন রুপা আর ছেলে সব সময় সাহস যুগিয়েছে। যখন অপারেশন হয় তখন আমি আমার মনকে শক্ত রাখার চেষ্টা করেছি আর সবসময় গডকে স্মরণ করেছি। অনেকেই আমার জন্য প্রার্থনা করেছে যার কারণে আমি আবার ফিরে এসেছি। আমার মনের জোরই আমাকে আবার অভিনয় জীবনে ফিরে আসার সাহস যোগাচ্ছে।

বিশ্বের ৫০ টি ক্যান্সার হাসপাতালের ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট ও চিকিৎসা সেবার জন্য ভিজিট করুন http://mediaider.com/ অথবা কল করুন ০১৭ ৫৫৬৯ ০০০৭ এই নম্বরে।

করোনায় শিশুদের উপসর্গ কিছুটা আলাদা

চীন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ রোগটি কম মারাত্মক। এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুদের মধ্যে এর উপসর্গও কিছুটা আলাদা। কোভিড-১৯ আক্রান্ত শিশুদের জ্বর, কাশি না–ও হতে পারে। 

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এ বিষয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই গবেষণায় চীন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শিশুদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ বৈশিষ্ট্য কেমন, তা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়নি। অল্প কিছু উপাত্ত নিয়ে প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ থেকে এপ্রিলের ২ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে নিশ্চিত হওয়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৭২ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ১৮ বছরের ওপরে রয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৮৮ জন। 

ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ থেকে এপ্রিলের ২ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে নিশ্চিত হওয়া ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৭২ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ১৮ বছরের ওপরে রয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৮৮ জন।  Source: Prothom-alo

ভিয়েতনামে যে কারণে করোনায় মৃত্যু শূন্য ও আক্রান্ত কম

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার দেওয়া তথ্যমতে, ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসে কোনো ব্যক্তি এখন পর্যন্ত মারা যায়নি। যেখানে এর প্রতিবেশী চীনসহ এশিয়ার দেশগুলোয় করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু চিকিৎসক, সাধারণ মানুষ ও সরকারগুলো ভাবিয়ে তুলেছে, সেখানে ভিয়েতনাম কী করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে রেখেছে এবং আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু শূন্যের কোঠায় ধরে রেখেছে, সেটাই আশ্চর্যের।

গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ভিয়েতনাম সরকারিভাবে স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ ও রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করার যে কর্মসূচি বহুদিন ধরে চর্চা করে আসছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সেটি বড় ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। আর যখন করোনাভাইরাস বা ‘কোভিড–১৯’ দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়েনি, তার আগেই ভিয়েতনাম গোটা দেশটাই লকডাউন করে দিয়েছে। এতে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)র সর্বশেষ (৭ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত আটটা) তথ্য অনুযায়ী ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪৫। আর যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী সংখ্যাটি ২৪৯। তবে উভয় সংস্থা বলছে, ভিয়েতনামে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। দেশটিতে ইতিমধ্যে ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ১২৩ জন।

চীনের উহান থেকে দেশে ফেরা ৬৬ বছর বয়সী এক ভিয়েতনামী প্রথম করোনাভাইরাসে শনাক্ত হন। আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ জানুয়ারি প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর প্রকাশ করে ভিয়েতনাম সরকার। ওই দিন থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘কোভিড–১৯’ রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৪ জনে। এর মধ্যে ২ জন চীনা নাগরিক ছাড়া বাকি সবাই ভিয়েতনামী।

ব্যাপক আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে তখনই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যাপক আকারে প্রচার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, কী করলে সুস্থ থাকবে, এটাই ছিল প্রচারের মূল্য বক্তব্য। এসবের পাশাপাশি দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে খুঁজে বের করে পরীক্ষা করেছে।

তবে গত ২ মার্চ সর্বনাশটা ঘটায় দেশটির একজন প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী। ইউরোপের তিনটি দেশ ঘুরে ওই ব্যবসায়ী ভিয়েতনামের হ্যানয় বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কর্মচারীদের পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়েন দেশে। বিমানবন্দরের পরীক্ষায় ফাঁকি দিলেও ভিয়েতনামের পুলিশ তাঁকে ঠিকই আটক করে। এরপর জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত।

এরপর ভিয়েতনাম সরকার একটা বড় পদক্ষেপ নেয়। সেটি হলো, ওই নারী যে বিমানে এসেছিলেন, তার সব যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তিনি যে রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই রাস্তা জীবাণুমুক্ত করা হয়, সেই পথের ধারে বাস করা প্রত্যেককে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এত সব করার পরও আক্রান্তের সংখ্যা ১৭–তে ঠেকিয়ে রাখা যায়নি—সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৯ জনে।

ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করে, যদি ইউরোপফেরত নারী যাত্রী বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফাঁকি না দিতেন, তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ত না। কারণ, তিনি যেসব স্থানে গেছেন, সেখানের সবাইকে পরীক্ষার মধ্যে আনলেও সবকিছু ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।

তবে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের তুলনায় ভিয়েতনাম এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যা করেছে, তা সারা দুনিয়ার জন্য অনুকরণীয়।

করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটননির্ভর দেশটি আগামী তিন মাসেই ৫ দশমিক ৯ থেকে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হারাবে। তারপরও মৃত্যু ও সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখাকেই দুনিয়া অন্য নজরে দেখছে। শুধু তা–ই নয় দেশটি কম দামে করোনা শনাক্তকরণ কিটও তৈরি করছে।


সূত্র: Prothom-alo.com

করোনা–আক্রান্তদের জন্য কয়েকটি টিপস

করোনাভাইরাস দিনকে দিন বিশ্বে ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। এ রোগের কারণে একে একে মৃত্যুর দুয়ারে গেছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ। মহামারি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। দেখা যাচ্ছে, এ রোগে দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধদের মধ্যেই বেশি। চীন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বৃদ্ধদের, বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এরই মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন বয়স্ক ব্যক্তিরাই।

বয়স্কদের মধ্যে দুর্বল প্রতিরোধক্ষমতা ও স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে কোভিড–১৯ সহজেই তাঁদের আক্রান্ত করে। বৃদ্ধদের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্তের ঝুঁকিও বেশি। কেন বৃদ্ধরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, এর সঠিক কারণ কেউই এখন পর্যন্ত বলতে পারছেন না। এটা হতে পারে বয়সজনিত কারণে। কারণ, এ সময় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। এ জন্য তাঁরা কোনো রোগ বা জীবাণুর সঙ্গে লড়তে পারেন না।

৬৫ বছর বা এর ঊর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁদের ঝুঁকি বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, হার্টের সমস্যা, ক্যানসার, হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রেও একইভাবে বিপজ্জনক করোনাভাইরাস।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই বলা হয়েছে, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিরা, যাঁদের দৈহিক বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে, তাঁরা যেন জনসমাগম এলাকা এড়িয়ে চলেন। তাঁরা যেন বাড়িতে থাকেন। বয়স্কদের সাবধানে কীভাবে রাখবেন, এর জন্য কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—

ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত রাখা
দরকারি ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিস আগে থেকে কিনে বাসায় রাখতে হবে। বাসার বৃদ্ধরা দুর্বল ও দীর্ঘদিন অসুস্থ হলে আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সুপারিশ করেছে, বেশ কিছু সপ্তাহের ওষুধ ও অন্যান্য জিনিস বাড়িতেই যেন রাখা হয়। সিডিসি তাদের নাগরিকদের বলেছে, প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসা পণ্যের সরবরাহগুলো আগে থেকে মজুত করে রাখুন। প্রিয়জনদের কী কী ওষুধ প্রয়োজন, তার খেয়াল পরিবার যেন রাখে। বাসার বয়স্কদের দিকে একটু সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন।

পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। ২০ সেকেন্ড ধরে নিজেদের হাত সাবান–পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই পরামর্শ করোনাভাইরাস সচেতনতার জন্য সবাই দিচ্ছেন। যদি হ্যান্ডওয়াশ-পানি না থাকে, সে ক্ষেত্রে স্যানিটাইজার দিয়েও হাত ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে। বাড়ি ও কর্মক্ষেত্রের জায়গাও যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে হবে। নিয়মিত বাড়ি ও কাজের জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করুন। এমনকি ইলেকট্রনিকসের জিনিসগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করুন।

কোনো জিনিস শেয়ার নয়
যৌথ পরিবারে সবাই একসঙ্গে থাকেন। একেকজনের ঝুঁকি একেক ধরনের হতে পারে। এ রকম অবস্থায় সবারই ঝুঁকি রয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে। একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, একই পরিবারে বৃদ্ধ ও শিশুরা থাকে। তাদের এই সময়ে বা মাঝেমধ্যে সর্দি-কাশি হয়। সে ক্ষেত্রে পরিবারের উচিত ব্যক্তিগত সব জিনিস এই মুহূর্তে আলাদা ব্যবহার করা। যেমন খাবার, পানির বোতল, বাসন-কোসন। প্রয়োজন হলে বাড়ির একটি আলাদা ঘরে অসুস্থ সদস্যকে রেখে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থাও করলে আরও ভালো হয়।

অনেক বৃদ্ধই আছেন, যাঁরা একা একা থাকেন। সে ক্ষেত্রে কীভাবে তাঁরা নিজেদের যত্ন নেবেন, সে বিষয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করে নিতে হবে। ফোন বা ই–মেইল কীভাবে ব্যবহার করবেন, জরুরি ফোন নম্বর, চিকিৎসকের নম্বর সব যেন হাতের কাছে থাকে।

আতঙ্ক নয়, আলোচনা করুন
অযথা আতঙ্কিত না হয়ে কোভিড-১৯ সম্পর্কে প্রতিবেশী, পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করতে হবে। কেউ আক্রান্ত হলে আগাম প্রস্তুতি কী হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা করে রাখুন। কোভিড-১৯ সম্পর্কে যতটা সম্ভব সচেতনতা বাড়াতে হবে, বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটা আরও প্রয়োজন। তাঁরা যাতে কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে না বের হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বৃদ্ধদের আশ্বস্ত করুন যে এ রোগে ভয়ের কিছু নেই।

চিকিৎসকদের পরামর্শ মানুন
করোনা নিয়ে আতঙ্ক না বাড়িয়ে চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ মেনে চলাই শ্রেয়। কিছুদিন বৃদ্ধদের বাড়ির বাইরে বের হতে না দিয়ে বাড়িতেই রাখতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ফিট থাকার শরীরচর্চা এই সময় তাঁরা করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর খাবার এ সময় খুব প্রয়োজন। সর্দি-কাশি হলে তা এড়িয়ে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

করোনার ভয়ে বিশ্ববাসী রীতিমতো একঘরে হয়ে রয়েছেন। বিশ্বের অনেক দেশ তাদের শহরগুলো লকডাউন করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নিজেদের ওয়েবসাইটে কোভিড-১৯ নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছে। সেখানে এ রোগের বিষয়ে সব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তথ্যসূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন

করোনা সন্দেহ হলে যা করবেন

শরীরে হালকা জ্বর, খুশ খুশ করে কাশছেন—সন্দেহ হতে পারে, করোনা নয় তো? কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনার কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড–১৯–এর প্রকাশ ঘটে জ্বরের মাধ্যমে। এমন অবস্থায় কী করবেন? জ্বর হলেই হাসপাতালে ছুটবেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না, জ্বর হলেই হাসপাতালে ছোটার দরকার নেই। কারণ এই রোগ খুবই সংক্রামক। এতে একজন থেকে অন্যজন, এমনকি হাসপাতালের অন্য রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

তাহলে এমন অবস্থায় করণীয় কী? সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, সন্দেহভাজন রোগীকে প্রাথমিকভাবে ঘরেই থাকতে হবে।

এই রোগ নিয়ে এত আতঙ্কের কারণ হচ্ছে এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসার শরু হয় লক্ষণ দেখে। আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ২ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ হয় জ্বর। এ ছাড়া শুকনো কাশি বা গলাব্যথা হতে পারে।

এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌রোগ, কিডনির সমস্যা, ক্যানসার ইত্যাদি থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।

প্রতিষেধক না থাকায় এর প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই এখন পর্যন্ত কার্যকর উপায়। এ জন্য ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে, অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে।

এ ছাড়া যতটা সম্ভব ঘরে থাকতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। আর এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

কারও জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হবে। এরপরও অবস্থার উন্নতি না হলে বা কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নাক-মুখ ঢেকে (মাস্ক ব্যবহার) বাড়িতে অপেক্ষা করতে হবে। অবস্থা খারাপ হলে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

প্রয়োজনে আইইডিসিআর এর করোনা কন্ট্রোল রুম (০১৭০০৭০৫৭৩৭) অথবা হটলাইন নম্বরে (০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৫৫০০৬৪৯০১–০৫) যোগাযোগ করা যাবে। এ ছাড়া করোনাসংক্রান্ত তথ্য জানতে বা সহযোগিতা পেতে স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ এবং ৩৩৩ নম্বরে ফোন করা যাবে।

অনলাইনে করোনা নিয়ে যোগাযোগ করতে আইইডিসিআরের ই-মেইল iedcrcovid19@gmail.com এবং ফেসবুক পেজে (Iedcr,COVID19 Control Room) যোগাযোগ করা যাবে।

Source: Prothom-Alo